আমাদের চারপাশে এমন অনেক প্রাণী রয়েছে যাদের চেহারায় অনেক মিল থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তারা একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তেমনই দুটি প্রাণী হলো সান্ডা এবং গুইসাপ। অনেকেই এদের এক মনে করলেও, এদের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য। এই ব্লগে আমরা জানব সান্ডা ও গুইসাপের মধ্যে পার্থক্য, তাদের বৈশিষ্ট্য ও জীবনধারার বিষয়ে।
সান্ডা একটি নিরীহ, ছোট আকৃতির সরীসৃপ। এর ইংরেজি নাম Spiny-tailed lizard । এটি মূলত মরুভূমি ও শুষ্ক এলাকায় বাস করে। এরা দেখতে মোটা ও ছোট হয়, লেজটি স্থূল ও মাংসল যা দেখতে মোটাসোটা মনে হয়।
গুইসাপ (বা মনিটর লিজার্ড) তুলনামূলক বড় আকৃতির সরীসৃপ। এর ইংরেজি নাম Monitor Lizard । এদের দেখা মেলে জলাশয়, নদী, খাল কিংবা গ্রামাঞ্চলের আশপাশে। গুইসাপ দেখতে ভয়ংকর হলেও সচরাচর মানুষের ক্ষতি করে না, তবে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
বিষয় | সান্ডা | গুইসাপ |
---|---|---|
আকৃতি | খাটো ও মোটা | লম্বা ও সরু |
লেজ | মোটা ও স্থূল | লম্বা ও সরু |
বাসস্থান | শুষ্ক ও মরুভূমি অঞ্চল | জলাশয়ের পাশ বা জঙ্গল |
স্বভাব | নিরীহ, ধীরগতির | সচল, ক্ষিপ্র |
আচরণ | মানুষকে আক্রমণ করে না | বিরক্ত করলে আক্রমণ করতে পারে |
খাদ্যাভ্যাস | গাছের পাতা, গুঁড়ি | ছোট প্রাণী, ডিম, মাংস |
অনেক সময় লোকমুখে শোনা যায়, সান্ডার তেল নানা রোগে উপকারী। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানে তার প্রমাণ নেই। বরং সান্ডা পরিবেশের জন্য উপকারী এক প্রাণী। অন্যদিকে গুইসাপকেও অনেক সময় বিষাক্ত মনে করা হয়, যা সঠিক নয়। গুইসাপ বিষাক্ত নয়, তবে আত্মরক্ষার্থে কামড় দিতে পারে।
সান্ডা ও গুইসাপ দেখতে মিল থাকলেও তাদের আচার-আচরণ, বাসস্থান ও জীবনধারা একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমরা যদি সচেতন হই এবং এই প্রাণীগুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করি, তাহলে অমূলক ভয় বা কুসংস্কারের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে। প্রকৃতি আমাদের সকলের, আসুন সবাইকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমরা সবাই গ্রহণ করি।
আপনার মতামত জানান:
আপনি কি কখনো সান্ডা বা গুইসাপ নিজের চোখে দেখেছেন? অভিজ্ঞতা থাকলে কমেন্টে জানান!
0 Comments